Header Ads

Header ADS

রোমান্টিক কবিতা || Romantic kobita

রোমান্টিক কবিতা || Romantic kobita:

রোমান্টিক কবিতা || Romantic kobita

          তোমাতে শুরু তোমাতেই শেষ 

শূন্য তথা তুমি আমি
শূন্য অনিঃশেষ ।
শূন্যে শুরু ভালবাসা
শূন্যে তাহা শেষ ।।
প্রেম এর পরিণতি জানি
শূন্য নিরন্তর ।
লাভ এর খাতায় থাকে শুধু
শূন্য অতঃপর ।।
তবু অন্ধকারে লিখে দিলাম
প্রিয় তোমার নাম ।
একটি প্রেমের চিঠি তোমায়
শূন্যে পাঠালাম ।।
শূন্যে দিলাম চুমু আমি
শূন্যে দিলাম প্রেম ।
শূন্য হাতে তোমায় পেতে
শূন্যে দাঁড়ালেম ।।
মধ্য রাতে শূন্যে তুমি
পাবে আমার সাড়া ।
শূন্য থেকে পড়বে ঝরে
আমার ইশারা ।।
হঠাৎ তুমি দেখবে তখন
আমি নিরুদ্দেশ ।
শূন্যে শুরু ভালবাসা
শূন্যে তাহা শেষ ।।

            একবার তুমি 
         শক্তি চট্টোপাধ্যায়

একবার তুমি ভালোবাসতে চেষ্টা কর–
দেখবে, নদির ভিতরে, মাছের বুক থেকে পাথর ঝরে পড়ছে
পাথর পাথর পাথর আর নদী-সমুদ্রের জল
নীল পাথর লাল হচ্ছে, লাল পাথর নীল
একবার তুমি ভাল বাসতে চেষ্টা কর ।

বুকের ভেতরে কিছু পাথর থাকা ভাল–ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়
সমস্ত পায়ে-হাঁটা পথই যখন পিচ্ছিল, তখন ওই পাথরের পাল একের পর এক বিছিয়ে
যেন কবিতার নগ্ন ব্যবহার, যেন ঢেউ, যেন কুমোরটুলির সলমা-চুমকি-জরি-মাখা প্রতিমা
বহুদূর হেমন্তের পাঁশুটেনক্ষত্রের দরোজা পর্যন্ত দেখে আসতে পারি।

বুকের ভেতরে কিছু পাথর থাকা ভাল
চিঠি-পত্রের বাক্স বলতে তো কিছু নেই–পাথরের ফাঁক-ফোকরে রেখে এলেই কাজ হাসিল–
অনেক সময় তো ঘর গড়তেও মন চায় ।

মাছের বুকের পাথর ক্রমেই আমাদের বুকে এসে জায়গা করে নিচ্ছে
আমাদের সবই দরকার । আমরা ঘরবাড়ি গড়বো–সভ্যতার একটা স্থায়ী স্তম্ভ তুলে ধরবো ।

রূপোলি মাছ পাথর ঝরাতে-ঝরাতে চলে গেলে
একবার তুমি ভালবাসতে চেষ্টা করো ।


               কথোপকথন
                পুর্ণেন্দু পত্রী

– তুমি আজকাল বড্ড সিগারেট খাচ্ছ শুভন্কর।

– এখুনি ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছি…

কিন্তু তার বদলে??

–বড্ড হ্যাংলা। যেন খাওনি কখনো?

– খেয়েছি।

কিন্তু আমার খিদের কাছে সে সব নস্যি।

কলকাতাকে এক খাবলায় চিবিয়ে খেতে পারি আমি,

আকাশটাকে ওমলেটের মতো চিরে চিরে,

নক্ষত্রগুলোকে চিনেবাদামের মতো টুকটাক করে,

পাহাড়গুলোকে পাঁপর ভাজার মতো মড়মড়িয়ে,

আর গঙ্গা?

সে তো এক গ্লাস সরবত।

–থাক। খুব বীরপুরুষ।

–সত্যি তাই…

পৃথিবীর কাছে আমি এই রকমই ভয়ংকর বিস্ফোরণ।

কেবল তোমার কাছে এলেই দুধের বালক,

কেবল তোমার কাছে এলেই ফুটপাতের নুলো ভিখারি,

এক পয়সা, আধ পয়সা কিংবা এক টুকরো পাউরুটির বেশী আর কিছু ছিনিয়ে নিতে পারিনা।

–মিথ্যুক..।

–কেন?

–সেদিন আমার সর্বাঙ্গের শাড়ি ধরে টান মারনি?

– হতে পারে।

ভিখারিদের কি ডাকাত হতে ইচ্ছে করবে না একদিনও??


              মনে থাকবে? 
              আরণ্যক বসু

পরের জন্মে বয়স যখন ষোলোই সঠিক
আমরা তখন প্রেমে পড়বো
মনে থাকবে?

বুকের মধ্যে মস্তো বড় ছাদ থাকবে
শীতলপাটি বিছিয়ে দেব;
সন্ধে হলে বসবো দু’জন।
একটা দুটো খসবে তারা
হঠাৎ তোমার চোখের পাতায় তারার চোখের জল গড়াবে,
কান্ত কবির গান গাইবে
তখন আমি চুপটি ক’রে দুচোখ ভ’রে থাকবো চেয়ে…
মনে থাকবে?

এই জন্মের দূরত্বটা পরের জন্মে চুকিয়ে দেব
এই জন্মের চুলের গন্ধ পরের জন্মে থাকে যেন
এই জন্মের মাতাল চাওয়া পরের জন্মে থাকে যেন
মনে থাকবে?

আমি হবো উড়নচন্ডি
এবং খানিক উস্কোখুস্কো
এই জন্মের পারিপাট্য সবার আগে ঘুচিয়ে দেব
তুমি কাঁদলে গভীর সুখে
এক নিমেষে সবটুকু জল শুষে নেব
মনে থাকবে?
পরের জন্মে কবি হবো
তোমায় নিয়ে হাজারখানেক গান বাঁধবো।
তোমার অমন ওষ্ঠ নিয়ে
নাকছাবি আর নূপুর নিয়ে
গান বানিয়ে__
মেলায় মেলায় বাউল হয়ে ঘুরে বেড়াবো…
মনে থাকবে?

আর যা কিছু হই বা না হই
পরের জন্মে তিতাস হবো
দোল মঞ্চের আবীর হবো
শিউলিতলার দুর্বো হবো
শরৎকালের আকাশ দেখার__
অনন্তনীল সকাল হবো;
এসব কিছু হই বা না হই
তোমার প্রথম পুরুষ হবো
মনে থাকবে?

পরের জন্মে তুমিও হবে
নীল পাহাড়ের পাগলা-ঝোরা
গাঁয়ের পোষাক ছুড়ে ফেলে
তৃপ্ত আমার অবগাহন।
সারা শরীর ভ’রে তোমার হীরকচূর্ণ ভালোবাসা।
তোমার জলধারা আমার অহংকারকে ছিনিয়ে নিল।
আমার অনেক কথা ছিল
এ জন্মে তা যায়না বলা
বুকে অনেক শব্দ ছিল__
সাজিয়ে গুছিয়ে তবুও ঠিক
কাব্য করে বলা গেল না!
এ জন্ম তো কেটেই গেল অসম্ভবের অসঙ্গতে
পরের জন্মে মানুষ হবো
তোমার ভালোবাসা পেলে
মানুষ হবোই__ মিলিয়ে নিও!

পরের জন্মে তোমায় নিয়ে…
বলতে ভীষণ লজ্জা করছে
ভীষণ ভীষণ লজ্জা করছে
পরের জন্মে তোমায় নিয়ে…
মনে থাকবে?

No comments

Powered by Blogger.